অনেক অনেক আগে দূরের কোন এক দেশের জনসাধারণের মধ্যে মানবদেহে বিষক্রিয়া সম্পর্কে একটি ধারণা প্রচলিত ছিল। ধারণাটি ছিল এরকম যে, “কেউ যদি বিষপান করে বা অন্য কোনভাবে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়, তবে তার বাঁচার একমাত্র উপায় হচ্ছে যে বিষটি দ্বারা সে আক্রান্ত হয়েছে তার চেয়ে অধিক শক্তিশালী বা তীব্র একটি বিষ পান করা”। এধরণের কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে যাতে কোন বিপদে পড়তে না হয় তাই দেশটির রাজা অত্যন্ত শক্তিশালী একটি বিষ পেতে চাইলেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি দেশের সবচেয়ে বড় ঔষধবিদ এবং সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যাক্তি দুজনকে ডেকে প্রত্যেককে এক সপ্তাহের মধ্যে একটি শক্তিশালী বিষ তৈরির নির্দেশ দিলেন। এক সপ্তাহ পর দুজনেই নিজের তৈরি করা বিষ নিয়ে হাজির হবে এবং একজন অন্যজনের তৈরি করা বিষ পান করার পর নিজের বিষটুকু পান করবে। এক্ষেত্রে দুজনের মধ্যে যার বিষ বেশি শক্তিশালী হবে সে বেঁচে থাকবে এবং অন্যজন মারা যাবে।
ঔষধবিদটি কোন সময় নষ্ট না করে কাজে লেগে গেল এবং একটি শক্তিশালী বিষ তৈরির জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে লাগল। কিন্তু বুদ্ধিমান লোকটি প্রথমেই বুঝে গেল সে যদি বিষ তৈরি করে এবং সেই বিষ নিয়ে হাজির হয় তবে তার বাঁচার কোন সম্ভাবনা নেই। কারণ, ঔষধবিদটি বিষ তৈরিতে তার চেয়ে অনেক বেশি পারদর্শী এবং ঔষধবিদের তৈরি করা বিষটি নিঃসন্দেহে সবচেয়ে শক্তিশালী হবে। তাই সে একটি প্ল্যান তৈরি করল যাতে সে বেঁচে থাকতে পারে এবং ঔষধবিদটি মৃত্যুবরণ করে।
কিন্তু ঔষধবিদটিও কম চালাক নয়। শেষ দিনে সে হঠাৎ করে উপলব্ধি করল যে, তার প্রতিদ্বন্দী যেহেতু দেশের সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যাক্তি তাই সে এতক্ষণে এটা অবশ্যই বুঝে গেছে যে, ঔষধবিদের বিষটিই সবচেয়ে শক্তিশালী হবে এবং বেঁচে থাকার জন্য সে নিশ্চয়ই একটি প্ল্যান তৈরি করেছে। কিছুক্ষণ চিন্তা করার পর সে বুদ্ধিমান লোকটির প্ল্যান বুঝতে পারল এবং সেও একটি প্ল্যান তৈরি করল।
নির্দিষ্ট সময়ে রাজা তাদের দুজনকে ডেকে বিষ পান করতে বললেন। দুজনেই পুরোপুরি প্রস্তুতি সহকারে এসেছিল। তাই রাজার নির্দেশ পাওয়া মাত্র তারা তা পালন করল। কিছুক্ষণের মধ্যেই বুদ্ধিমান লোকটি মারা গেল তবে ঔষধবিদটি বেঁচে থাকল। অন্যদিকে রাজার উদ্দেশ্যও ব্যর্থ হল।
আপনাদের কাজ হচ্ছে, কার কী প্ল্যান ছিল এবং সেখানে আসলে কী ঘটেছিল সেই রহস্যের সমাধান করা।
অনেক অনেক আগে দূরের কোন এক দেশের
TomVai
0
Post a Comment